B.M : 23081

H.M : 1225

Degree : 2523

EIIN : 126933

Phone : 02588867910

Mob : 01309 126933

কলেজের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস


নওহাটা সরকারি ডিগ্রি কলেজটি রাজশাহী জেলা সদর থেকে মাত্র ১০কি:মি দূরে রাজশাহী নওগাঁ মহাসড়কের ধারে রাজশাহী শাহমখদুম বিমানবন্দরের উত্তর দিকে পবা উপজেলার নওহাটা নামক স্থানে একটি মনোরম পরিবেশে অবস্থিত। বাংলাদেশ স্বাধীনতা পূর্বকালে পবা উপজেলায় কোথাও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিলনা। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের শুরুর দিকে ত্রান ও পূর্নবাসন মন্ত্রী হিসাবে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান ত্রান ও পূর্নবাসন কার্যক্রম দেখার জন্য নওহাটায় আসেন। সময়ের দাবির প্রেক্ষিতে নওহাটায় একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য সেদিনের সচেতন ব্যক্তিগন এবং ছাত্র জনতা জোরালো দাবি তোলেন। এই দাবির প্রেক্ষিতে জনাব এ.এইচ.এম কামারুজ্জামানের সভাপতিত্তে একটি সভায় কলেজ পরিচালনা কমিটি গঠিত হয়।


সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জনাব এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান সভাপতি, তৎকালীন আওয়ামীলীগ নেতা ও প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য সরদার আমজাদ হোসেন সদস্য, রাজশাহী আওয়ামী লীগ নেতা জনাব আব্দুল হাকিম সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়াও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন জনাব মোঃ মেরাজ উদ্দিন মোল্লা, জনাব আব্দুল কুদ্দুস, মনসুর রহমান মানিক, বাবু রতিকান্ত মন্ডল, সুধীর সাহা, আব্দুর গাফফার, আব্দুল আহাদ, মোঃ আশরাফ আলী দেওয়ান, আমজাদ ডিলার, মোঃ হেফাজ উদ্দীন প্রমুখ। ঐ সময় মোঃ জিল্লুর রহমান কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য ৫০শতাংশ জমি দান করেন। প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন জনাব এ.কে.এম আজিজুর রহমান, প্রতিষ্ঠালগ্নে কলেজের নামকরণ করা হয় নওহাটা মহাবিদ্যালয়, ১৯৭৩ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহী কর্তৃক একাদশ শ্রেণির পাঠদানে মঞ্জুরি পাওয়া যায়।


১৯৭৪ সালের কলেজটি মানবিক, বানিজ্য ও বিজ্ঞান বিভাগের জন্য বোর্ড কর্তৃক পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি পায় এবং ঐ সালে প্রথম নওহাটা কলেজ হতে এইচ.এস.সি পরীক্ষায় ছাত্র-ছাত্রী অংশ গ্রহন করে। ১৯৭৪ সালের শেষেরদিকে প্রতিষ্ঠাকালের অধ্যক্ষ এ.এক.এম আজিজুর রহমান রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবে যোগদান করে কলেজ হতে ইস্তফাদেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেন অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক জনাব আলতাব হোসেন। তিনি কিছুদিন ভারপ্রাক্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনের পর স্বেচ্ছায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব ছেড়েদেন। কলেজ পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে ১৯৭৫ সালে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িক্ত দেওয়া হয় বাংলা বিভাগের প্রভাষক মোঃ আশরাফ আলী দেওয়ানকে। পরে অবশ্য তিনি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চাইলে কলেজ কমিটি মাজহারুল আনোয়ারকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেন।


১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর কলেজের দুর্দিন নেমে আসে। জনাব মাজহারুল আনোয়ার অধ্যক্ষ পদে ইস্তফা দিয়ে চলে যান। আবারো বাংলা বিভাগের প্রভাষক মোঃ আশরাফ আলী দেওয়ানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি কিছুদিন দায়িত্ব পালন শেষে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় আব্দুল হককে। কিছুদিন পর জনাব আব্দুল হক ও ইস্তফা দিয়ে চলে যান। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আলী আজগারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।


কয়েকমাস পর অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান জনাব মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, কলেজের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ হতে খারাপ হতে থাকে। এক সময় আব্দুর রাজ্জাক সাহেব পদত্যাগ করে চলে যান এসময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলা বিভাগের প্রভাষক জনাব মোঃ আশরাফ আলী দেওয়ান কে। পরবর্তীতে তাকে অধ্যক্ষ হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং অধ্যক্ষ হিসাবে তিনি তার কর্ম জীবন শেষ করেন।


বর্তমানে কলেজটি একটি পূর্নাঙ্গ কলেজ এখানে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে মানবিক, বানিজ্য ও বিজ্ঞান এবং ডিগ্রি পর্যায়ে ও কলা বিভাগ, বানিজ্য বিভাগ ও বিজ্ঞান বিভাগ এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইতিহাস বিষয়ে অনার্স কোর্সও চালু আছে। এছাড়াও কারিগরি শাখা (বিএমটি) এবং বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয় পরিচালিত এইচ.এস.সি ও ডিগ্রি পর্যায়ে বি.এ এবং বি.এস.এস কোর্স চালু আছে।



গত ১৭/০৬/২০১৪ইং তারিখ হতে জনাব মোঃ আয়েন উদ্দীন সংসদ সদস্য ৫৪ রাজশাহী-০৩ (পবা-মোহনপুর) নওহাটা ডিগ্রি কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতির দায়িত্ব থাকাকালিন সময়ে কলেজের অধ্যক্ষ, সকল শিক্ষক কর্মচারী ও স্থানীয় জনগণের আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে, মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব মোঃ আয়েন উদ্দিন কলেজটি জাতীয়করণের তালিকায় নওহাটা ডিগ্রি কলেজটির নাম অন্তর্ভূক্তকরণের আবেদন করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কলেজটি জাতীয়করণের তালিকায় অন্তভুক্তির সদয় অনুমোদন প্রদান করেন। গত ২০১৮ সালের ৮ আগষ্ট কলেজটি, “নওহাটা সরকারি ডিগ্রি কলেজ” নামে গেজেট ভূক্ত হয়।



শিক্ষার যথাযথ বিকাশ সাধনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো ও সহায়ক সুযোগ সুবিধা গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রাখে। অত্র কলেজটিতে অবকাঠামোগত-এ সকল সুযোগ সুবিধা মোটামুটি ভাবে বিদ্যমান। কলেজটিতে বর্তমানে ১টি তিনতলা একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন ১টি দুইতলা অনার্স বিল্ডিং এবং প্রায় ৬০০০ বই সমৃদ্ধ একটি লাইব্রেরি রয়েছে। এছাড়াও  কলেজের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন শিক্ষা সহায়ক কার্যক্রমে অংশগ্রহন করে উপজেলা পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গৌরব অর্জন করেছে। বর্তমান প্রশাসন কলেজ শিক্ষার অনুকুল পরিবেশ তৈরী ও মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিন্তকরনে বদ্ধপরিকর।